মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ২২ডিসেম্বর জগন্নাথপুর ইউনিয়নাধীন বারপাড়া, চাঁপাপুর, আদর্শ সদর, কুমিল্লার গণবিদ্যাপীঠ কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজে “বীরের কন্ঠে বীর কাহিনী” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার দুপুর ১২ ঘটিকায় গণবিদ্যাপীঠ কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ কর্তৃক উপস্থাপিত স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক স্মৃতিচারণ-“বীরের কন্ঠে বীর কাহিনী” অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত সভাপতি প্রফেসর মুহাম্মদ কবীর চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক ফখরুল ইসলাম। পরবর্তীতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে মিলে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ এনামুল হক ভূঁইয়া।
কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক এ.কে.এম মশিউল আলমের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কুমিল্লার সম্মানিত চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ রুহুল আমিন ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৬নং জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জনাব মো. শাহাজাহান (সাজু)।
“বীরের কন্ঠে বীর কাহিনী” শীর্ষক আলোচনা তুলে ধরেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা জনাব আবদুল লতিফ খন্দকার। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কথা ও বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের বীরত্বপূর্ণ বীর কাহিনী বলতে গিয়ে তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক/শিক্ষিকা ও অভিভাবকবৃন্দ তাঁর বক্তব্য ধৈর্য্য ও মনোযোগ সহকারে শোনেন। তিনি শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের কুমিল্লার বিভিন্ন ইতিহাস তুলে ধরে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবীত হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে মহান মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ এর দিনগুলোর করুণ কাহিনী এবং রাজাকার, আল বদর বাহিনীর নৃশংসতা সম্পর্কে ও বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরেন। তিনি বক্তব্যে বলেন, আমরা আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও বর্তমান প্রজন্মের নিকট তুলে ধরতে পারিনি। ২৬ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বাধীনতার ঘোষণা ডাক শুনার পর থেকেই ‘যুদ্ধজয়ের নেশায়’ দেশবাসী যার যার মত করে প্রস্তুতি গ্রহণ করে। যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানে এবং শুনে তাদের ভিতরে দেশের জন্য একটু হলেও অনুভূতি জেগে উঠবে। কত মা বোনের ভাইয়ের রক্ত ও ইজ্জতের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। তোমরা তোমাদের বাবা, মা, মামা ও প্রতিবেশী মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট হতে মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী শুনবে। তাহলে বুঝতে পারবে কত কষ্টের বিনিময়ে আমরা এই স্বাধীন বাংলার মানচিত্র পেয়েছি, পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা।
সভাপতি প্রফেসর মুহাম্মদ কবীর চৌধূরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, যাদের আত্মত্যাগ ও প্রাণের বিনিময়ে আমরা আমাদের এই প্রিয় বাংলাদেশকে পেয়েছি সেই সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসা। সেই সাথে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতঞ্জ চিত্তে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার জন্ম না হলে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন ভূখন্ডের জন্ম হতো না, যার জন্ম না হলে তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতোনা।
সবশেষে শিক্ষার মানোন্নয়নে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে কুমিল্লা ০৬ আসনের মাননীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বাহার মহোদয় শিক্ষাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে যে ভূমিকা রেখেছেন তা আমরা কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করছি। তিনি গণবিদ্যাপিঠ কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজের সার্বক্ষনিক তদারকি ও নির্দেশনায় ইতিমধ্যেই কলেজটি একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। লেখাপড়ার মান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়নে এমপি মহোদয়ের হাতকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আপনাদের সহযোগিতা বিশেষ প্রয়োজন। তার জন্য আগামি জাতীয় নির্বাচনে উনাকে সমর্থন করে শিক্ষার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্য আবারও বিপুল ভোটে তাকে নির্বাচিত করে আপনাদের এবং সকল ছাত্র-ছাত্রীদের বাবা-মাকে ভোট প্রদান করতে আহবান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন এবং অদ্যকার সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
Copyright © 2015 All rights Reserved
Powered by: Rapid IT